উত্তরবঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো অনেক আগে থেকে। বিশেষ করে শীত এর সময়। তীব্র শীত উপভোগ করার ইচ্ছা ছিলো। তাই এবার আর আগের মত দক্ষিনাঞ্চল এ পা বাড়াইলাম না। ছুটে চললাম উত্তরের দিকে।
৫ জানুয়ারি ২০২১। রাত ৮ টা। কল্যানপুর বাস স্ট্যান্ড। চাইসিলাম নাবিল এর এসি তে যাই, ধুলা নাকি অনেক তাই। কিন্তু ততক্ষনে নাবিল এর এসি বাস পগার পার। তাই বাধ্য হয়ে হানিফ এর টিকেট কাটলাম। রাত ৯.৪৫ এর বাস। ভালো লাগতেসিলো ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এর আগে কখনো যাওয়া হয় নাই। ভালোই যাচ্ছিলাম। বিপত্তি ঘটল ভোর ৪ টায় যখন দিনাজপুর পৌছাইলাম। ভাই বিশ্বাস করেন এত তীব্র শীত যে, আমার মনে একটাই লাইন মনে পড়তেসিলো "পাগল হয়ে যাবো আমি পাগল হয়ে যাবো"। যাই হোক ৭ টার দিকে পঞ্চগড় শহরে নেমে যাই। অবাক করা বিষয় এই প্রথম আমি সব যায়গায় গ্লাস এ চা দিতে দেখলাম। চা পরটা খেয়ে দৌড় দিলাম তেতুলিয়ার বাস ধরতে। প্ল্যান ছিলো তেতুলিয়া যাবো তারপর বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট। পঞ্চগড় শহর থেকেই বাস পাওয়া যায়। আনুমানিক ১ ঘন্টার মত লাগবে।
তেতুলিয়া পৌছে একটা ভ্যান ভাড়া করসিলাম। এই প্রথম এত ভালো একজন মানুষ দেখলাম যিনি খুব আগ্রহ নিয়ে আমাকে ঘুরায়ে দেখাচ্ছেন। যেনো আমি উনার অনেক দিনের আপন মানুষ।
আমি তেতুলিয়া ডাকবাংলো, কলকাতা রোড সহ আরো অনেক কিছু দেখেছিলাম। কাজি এন্ড কাজী টি এস্টেট অফ ছিলো তাই যেতে পারি নি। তেতুলিয়া ঘুরা শেষ এ গেলাম বাংলাদেশের শেষ সীমানা বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট এ। খুব ই দুঃখজনক ব্যাপার এটা যে আমি ডিম এর সামনে ইয়ে মানে ০ এর সামনে যাইতে পারি নাই, কোভিড এর জন্য। আমি একা গিয়েছিলাম, এটা শুনে বিজিবি আংকেল রা একটু অবাক হয়ে তাকিয়েছিলো কতক্ষন।
তারপর সব ঘুরে তেতুলিয়া যখন আসি তখন দুপুর ৩ টা। তেতুলিয়া থেকে আবার পঞ্চগড় এর উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আমার প্ল্যান ছিলো পঞ্চগড় থেকে ডিরেক্ট চট্টগ্রাম চলে যাবো। কিন্তু ওইদিন ডিরেক্ট কোনো বাসের শিডিউল ছিলো না তাই বাধ্য হয়ে ওইদিন রাত ৮ টার বাসে ঢাকা ব্যাক করেছি।
পঞ্চগড় এর মানুষ খুব ই ভালো ও মিশুক বলে মনে হইলো আমার কাছে। একটাই শুধু একটু কষ্ট হইসে, পঞ্চগড় এ ভালো খাবার হোটেল নেই বললেই চলে।
খরচঃ
ঢাকা-পঞ্চগড়ঃ ৬৫০/-
রাতে হোটেলে বার্গারঃ ৮০/-(বিলো এভারেজ)
সকালে চা পরটাঃ ১০/-
পঞ্চগড়-তেতুলিয়াঃ৫০/-
তেতুলিয়া ঘুরাঃ ৩৫০/-
তেতুলিয়া তে নাস্তাঃ ৩০/-
তেতুলিয়া-পঞ্চগড়ঃ ৫০/-
দুপুরের লাঞ্চঃ ১২০/-(ভাত/ডাল/মুরগি)
পঞ্চগড়-ঢাকাঃ ১০০০